मौसम क्रिकेट ऑपरेशन सिंदूर क्रिकेट स्पोर्ट्स बॉलीवुड जॉब - एजुकेशन बिजनेस लाइफस्टाइल देश विदेश राशिफल लाइफ - साइंस आध्यात्मिक अन्य
---Advertisement---

Disease Cycle Of Powdery Mildew Of Pea → মটরশুঁটির পাউডারি মিলডিউ রোগের জীবনচক্র

On: September 4, 2025 6:26 AM
Follow Us:
Disease Cycle Of Powdery Mildew Of Pea

Join WhatsApp

Join Now
---Advertisement---

কল্পনা করুন, আপনার জমিতে মটরশুঁটির গাছগুলো সবুজে ঝলমল করছে, ফুল ধরছে, আর কিছুদিন পরেই ফসল কাটার সময়। হঠাৎ দেখলেন, পাতায় সাদা সাদা গুঁড়োর মতো দাগ পড়েছে, যেন কেউ ময়দা ছড়িয়ে দিয়েছে। এটা মটরশুঁটির পাউডারি মিলডিউ রোগ, যা আপনার ফসলকে নষ্ট করে দিতে পারে। এই রোগ শুধু ফসলের সৌন্দর্যই নষ্ট করে না, ফলনও ৩০-৪০ শতাংশ কমিয়ে দেয়। কিন্তু চিন্তার কিছু নেই, এই লেখায় আমরা ধাপে ধাপে বুঝব এই রোগের জীবনচক্র, কীভাবে ছড়ায়, আর কীভাবে রোধ করা যায়। এটা জানলে আপনি আপনার ফসল বাঁচাতে পারবেন আর হাসিমুখে ফসল কাটতে পারবেন।

এই রোগ মটরশুঁটির জন্য একটা বড় সমস্যা, কিন্তু এটা শুধু মটরশুঁটিই নয়, অন্য ফসলেও হতে পারে। এটা একটা ছত্রাকের কারণে হয়, যার নাম Erysiphe pisi। এই ছত্রাক গাছের পাতা, কান্ড, এমনকি ফলেও আক্রমণ করে। আপনি যদি সময়মতো এই রোগ চিনে প্রতিরোধ করতে পারেন, তাহলে আপনার জমি সুস্থ থাকবে। এই লেখাটি সাধারণ কৃষকদের জন্য সহজ ভাষায় লেখা, যাতে আপনি বুঝতে পারেন এবং কাজে লাগাতে পারেন। চলুন, ধাপে ধাপে পাউডারি মিলডিউ রোগের জীবনচক্র জানি, যাতে আপনি এটার বিরুদ্ধে লড়তে প্রস্তুত হন।

পাউডারি মিলডিউ রোগ কী

পাউডারি মিলডিউ হলো একটা ছত্রাকজনিত রোগ, যা মটরশুঁটির গাছের পাতায়, কান্ডে, আর ফলে সাদা বা ধূসর গুঁড়োর মতো দাগ তৈরি করে। এই ছত্রাকটি গাছের খাবার শুষে নেয়, ফলে গাছ দুর্বল হয়। এটা সাধারণত শীতকালে বা শুষ্ক আবহাওয়ায় বেশি হয়, যখন তাপমাত্রা ২০-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে। বর্ষাকালে এটা কম হলেও, আর্দ্রতা বেশি থাকলে ছড়াতে পারে। এই রোগ চিনতে না পারলে ফলন কমে যায়, আর ছোলার গুণগত মানও খারাপ হয়। তাই এর জীবনচক্র জানা জরুরি।

রোগের জীবনচক্র ধাপে ধাপে

ছত্রাকের জীবনচক্র বোঝা মানে রোগ কীভাবে ছড়ায় আর কীভাবে বাঁচায় তা বোঝা। এখানে ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা করছি:

ধাপ ১: ছত্রাকের বীজাণু তৈরি

ছত্রাকটি পুরনো গাছের অবশেষে বা মাটিতে থাকে। এরা ছোট ছোট বীজাণু তৈরি করে, যাকে বলা হয় conidia। এই বীজাণুগুলো খুব হালকা, বাতাসে ভেসে বেড়ায়। যখন মটরশুঁটির গাছ কাছাকাছি থাকে, তখন এই বীজাণু গাছের পাতায় গিয়ে পড়ে।

ধাপ ২: গাছে সংক্রমণ

বীজাণু পাতায় পড়ার পর, এটা গাছের পৃষ্ঠে আটকে যায়। এই ছত্রাকের জন্য বেশি জলের দরকার নেই, তাই শুষ্ক আবহাওয়াতেও এটা বাড়তে পারে। বীজাণু থেকে ছোট শিকড়ের মতো অংশ বের হয়, যা গাছের পাতার ভেতর ঢুকে খাবার শুষে নেয়। এই সময় পাতায় সাদা দাগ দেখা যায়।

ধাপ ৩: ছত্রাকের বৃদ্ধি

একবার গাছে ঢুকে গেলে, ছত্রাক দ্রুত বাড়তে থাকে। এটা পাতার উপর সাদা গুঁড়োর মতো স্তর তৈরি করে। এই স্তরে নতুন বীজাণু তৈরি হয়, যা বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। মাত্র ৫-৭ দিনে একটা গাছ থেকে পুরো ক্ষেতে ছড়াতে পারে।

ধাপ ৪: ছড়ানো

বীজাণুগুলো বাতাস, পোকামাকড়, বা কৃষকের হাত-পায়ের মাধ্যমে ছড়ায়। যদি ক্ষেতে গাছ ঘন থাকে, তাহলে রোগ আরও দ্রুত ছড়ায়। এছাড়া, পুরনো গাছের অবশেষ থেকেও নতুন গাছে ছড়ায়।

ধাপ ৫: শীতকালে টিকে থাকা

যখন ফসল কাটা হয়, তখন ছত্রাক মাটিতে বা পুরনো পাতায় থেকে যায়। এরা শক্ত খোলসের মতো অংশ তৈরি করে, যাকে বলে cleistothecia। এই অংশ শীতকালে টিকে থাকে আর পরের মৌসুমে আবার সংক্রমণ শুরু করে।

রোগের লক্ষণ

রোগ চেনা খুব জরুরি। এখানে সহজে লক্ষণগুলো বলছি:

১. পাতায় সাদা বা ধূসর গুঁড়োর মতো দাগ দেখা যায়। এটা দেখতে ময়দা বা তালকম পাউডারের মতো।

২. দাগগুলো পাতার উপরে বা নিচে, কান্ডে, এমনকি ফলেও ছড়ায়।

৩. পাতা হলুদ হয়ে যায়, কুঁকড়ে যায়, আর শুকিয়ে ঝরে পড়ে।

৪. ফল ছোট হয়, সংখ্যা কমে, আর গুণগত মান খারাপ হয়।

এই লক্ষণ দেখলে তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নিন।

রোগের প্রভাব

এই রোগ হলে মটরশুঁটির ফলন অনেক কমে যায়। পাতা ঝরে যাওয়ায় গাছ খাবার তৈরি করতে পারে না। ফলে ফলের সংখ্যা আর ওজন কমে। বাজারে এই ছোলার দামও কম পাওয়া যায়। কৃষকের আয় কমে, আর পরিবারের জন্য খাবারের ঘাটতি হয়। তাই রোগ প্রতিরোধ করা খুব জরুরি।

প্রতিরোধের ধাপসমূহ

রোগ প্রতিরোধ করা চিকিত্সার চেয়ে সহজ। এখানে ধাপে ধাপে গাইড:

১. ভালো বীজ বেছে নিন: রোগমুক্ত বীজ কিনুন। বীজকে Carbendazim দিয়ে ট্রিট করুন, ২ গ্রাম প্রতি কিলো বীজ।

২. ফসল ঘুরান: একই জমিতে বারবার মটরশুঁটি না লাগান। ধান, গম বা অন্য ফসল লাগান।

৩. গাছের দূরত্ব রাখুন: ৩০-৪৫ সেন্টিমিটার দূরত্বে গাছ লাগান, যাতে বাতাস চলাচল করে।

৪. জমি পরিষ্কার রাখুন: ফসল কাটার পর পুরনো গাছের অবশেষ পুড়িয়ে ফেলুন বা কম্পোস্ট করুন।

৫. সার ব্যবহার: নাইট্রোজেন, ফসফরাস, আর পটাশ সমানভাবে দিন। দুর্বল গাছ সহজে রোগে আক্রান্ত হয়।

৬. নিয়মিত চেক: ক্ষেতে ঘুরে দেখুন। সাদা দাগ দেখলে তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নিন।

৭. জল দেওয়া: পাতায় জল না লাগিয়ে মাটিতে জল দিন, কারণ পাতা ভেজা থাকলে রোগ বাড়ে।

চিকিত্সার ধাপসমূহ

যদি রোগ হয়ে যায়, তাহলে চিকিত্সা করুন। এখানে ধাপগুলো:

১. আক্রান্ত অংশ তুলে ফেলুন: ছোট দাগ দেখলে আক্রান্ত পাতা তুলে পুড়িয়ে ফেলুন।

২. ওষুধ স্প্রে: Sulfur-based fungicide বা Carbendazim ব্যবহার করুন। ৫০০ গ্রাম প্রতি হেক্টর, ১০ দিন পর আবার স্প্রে করুন।

৩. Dinocap বা Triadimefon: ১ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করুন। সকালে বা সন্ধ্যায় করুন।

৪. বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: রোগ বেশি হলে কৃষি অফিসারের সাথে কথা বলুন।

ওষুধ ব্যবহারের সময় গ্লাভস পরুন আর নির্দেশ মেনে চলুন।

উপসংহার

মটরশুঁটির পাউডারি মিলডিউ রোগ একটা চ্যালেঞ্জ, কিন্তু সঠিক জ্ঞান আর পদক্ষেপ নিলে এটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এই রোগের জীবনচক্র জেনে আপনি বুঝতে পারবেন কীভাবে এটা ছড়ায় আর কীভাবে রোধ করা যায়। ভালো বীজ, সঠিক দূরত্ব, আর সময়মতো ওষুধ ব্যবহার করলে আপনার ফসল সুস্থ থাকবে। এতে আপনার ফলন বাড়বে, আর বাজারে ভালো দাম পাবেন। কৃষি হলো ধৈর্যের কাজ, তাই নিয়মিত খেয়াল রাখুন। আপনার জমি সবুজ থাকুক, আর ফসল ভালো হোক!

Join WhatsApp

Join Now

Join Telegram

Join Now

Leave a Comment